Bangladesh ০৫:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহে শিশু সন্তানকে গলাটিপে হত্যা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:০৯:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১২৮ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:

কুমিল্লার মুরাদনগরে স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহের জেরে শিশু সন্তানকে গলাটিপে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে মুরাদনগর উপজেলা সদরের উত্তরপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত, ক্বারি আবু নাঈম ওরফে নাঈম হুজুর (৪৫) উপজেলা সদরের উত্তর পাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে। সে ঢাকার একটি মসজিদে ইমামতি করেন। নিহত শিশু আব্দুল্লাহ ওরফে রাফসান (১৬ মাস) আবু নাঈমের তৃতীয় সন্তান।

শিশু আব্দুল্লাহ ওরফে রাফসানের মা শাহিদা আক্তার জানান, শিশু রাফসানের জন্মের পর থেকেই তার বাবা তাকে নিজের সন্তান হিসেবে মেনে নিতে পারছিল না। এ বিষয়টি নিয়ে তাদের সাংসারিক জীবনে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। শনিবার সকাল ৯টার দিকে শিশু রাফসানকে চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা জেলা শহরে নিয়ে যেতে চায় তার বাবা নাঈম। তখন শিশুটির মা তাদের সাথে যেতে চাইলে বাধা দেন তার স্বামী। বিষয়টিকে খুব ভালোভাবে নিতে পারেনি তার মা শাহিদা আক্তার। তাই নিজে যেতে না পারায় স্বামীর সাথে তার বড় ছেলে ১২ বছর বয়সী আনাস কে পাঠায় সফর সঙ্গী হিসেবে। অল্প সময়ের মধ্যেই তার বড় ছেলে একা বাড়ি চলে আসে। বাড়ী ফিরে বড় ছেলে আনাস জানায় তার বাবা তাকে মুরাদনগর সদরের বাজারে রেখে ছোট ভাইকে নিয়ে একা চলে গেছে কুমিল্লায়। পরে বেলা ১২টার দিকে মৃত অবস্থায় রাফসানকে নিয়ে বাড়ি ফিরে তার বাবা। সে জানায় কুমিল্লা শহরে যাবার পথে কংশনগর এলাকায় গাড়ির ভিতরেই অসুস্থতার কারণে শিশু রাফসান মৃত্যুবরণ করেছে। তবে মা শাহিদা আক্তারের দাবি দীর্ঘদিন ধরে তার স্বামী হুমকি দিয়ে আসছিল সন্তানটিকে মেরে ফেলার। অসুস্থতা জনিত কারণে নয় তার স্বামী শিশু রাফসানকে গলাটিপে হত্যা করেছে।

স্থানীয়রা জানান, শিশু রফসানের জন্মের পর থেকে স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহে তার স্বামী বহুবার সালিশি বৈঠক ডেকেছে। প্রতিটি সালিশেই শিশু সন্তান রাফসানকে মেরে ফেলার হুমকি দিতো তার বাবা নাইম। তবে সালিশে স্ত্রীর পরকীয়ার কোন প্রমাণ দিতে না পারায় স্থানীয় মাতব্বরদের পরামর্শে তারা একসাথে সংসার করছিল। হয়তো তার স্ত্রীর সেই পরকীয়া সন্দেহের জেরেই শিশু রফসানকে হত্যা করা হয়েছে।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় শিশুটির বাবা নাঈম মিয়াকে আটক করা হয়েছে। শিশু রাফসানের লাশ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তর জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

2 thoughts on “মুরাদনগরে স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহে শিশু সন্তানকে গলাটিপে হত্যা

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ALAMGIR HOSSAIN

মুরাদনগর উপজেলা, কুমিল্লা। সম্পাদক, দেশ আমার ২৪ যোগাযোগ: +880 1747 808 428
ট্যাগস :

মুরাদনগরে স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহে শিশু সন্তানকে গলাটিপে হত্যা

আপডেট সময় : ০৫:০৯:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার:

কুমিল্লার মুরাদনগরে স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহের জেরে শিশু সন্তানকে গলাটিপে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে মুরাদনগর উপজেলা সদরের উত্তরপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত, ক্বারি আবু নাঈম ওরফে নাঈম হুজুর (৪৫) উপজেলা সদরের উত্তর পাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে। সে ঢাকার একটি মসজিদে ইমামতি করেন। নিহত শিশু আব্দুল্লাহ ওরফে রাফসান (১৬ মাস) আবু নাঈমের তৃতীয় সন্তান।

শিশু আব্দুল্লাহ ওরফে রাফসানের মা শাহিদা আক্তার জানান, শিশু রাফসানের জন্মের পর থেকেই তার বাবা তাকে নিজের সন্তান হিসেবে মেনে নিতে পারছিল না। এ বিষয়টি নিয়ে তাদের সাংসারিক জীবনে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। শনিবার সকাল ৯টার দিকে শিশু রাফসানকে চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা জেলা শহরে নিয়ে যেতে চায় তার বাবা নাঈম। তখন শিশুটির মা তাদের সাথে যেতে চাইলে বাধা দেন তার স্বামী। বিষয়টিকে খুব ভালোভাবে নিতে পারেনি তার মা শাহিদা আক্তার। তাই নিজে যেতে না পারায় স্বামীর সাথে তার বড় ছেলে ১২ বছর বয়সী আনাস কে পাঠায় সফর সঙ্গী হিসেবে। অল্প সময়ের মধ্যেই তার বড় ছেলে একা বাড়ি চলে আসে। বাড়ী ফিরে বড় ছেলে আনাস জানায় তার বাবা তাকে মুরাদনগর সদরের বাজারে রেখে ছোট ভাইকে নিয়ে একা চলে গেছে কুমিল্লায়। পরে বেলা ১২টার দিকে মৃত অবস্থায় রাফসানকে নিয়ে বাড়ি ফিরে তার বাবা। সে জানায় কুমিল্লা শহরে যাবার পথে কংশনগর এলাকায় গাড়ির ভিতরেই অসুস্থতার কারণে শিশু রাফসান মৃত্যুবরণ করেছে। তবে মা শাহিদা আক্তারের দাবি দীর্ঘদিন ধরে তার স্বামী হুমকি দিয়ে আসছিল সন্তানটিকে মেরে ফেলার। অসুস্থতা জনিত কারণে নয় তার স্বামী শিশু রাফসানকে গলাটিপে হত্যা করেছে।

স্থানীয়রা জানান, শিশু রফসানের জন্মের পর থেকে স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহে তার স্বামী বহুবার সালিশি বৈঠক ডেকেছে। প্রতিটি সালিশেই শিশু সন্তান রাফসানকে মেরে ফেলার হুমকি দিতো তার বাবা নাইম। তবে সালিশে স্ত্রীর পরকীয়ার কোন প্রমাণ দিতে না পারায় স্থানীয় মাতব্বরদের পরামর্শে তারা একসাথে সংসার করছিল। হয়তো তার স্ত্রীর সেই পরকীয়া সন্দেহের জেরেই শিশু রফসানকে হত্যা করা হয়েছে।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় শিশুটির বাবা নাঈম মিয়াকে আটক করা হয়েছে। শিশু রাফসানের লাশ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তর জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।