ইসলামে প্রবীণদের সম্মান, অসম্মানে কঠোর হুঁশিয়ারি রয়েছে

- আপডেট সময় : ০৩:২৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৩৬ বার পড়া হয়েছে
মোঃ এরশাদ আলী: হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
ধরণীতে মানুষ জন্ম লাভের পর শিশু কিশোর তরুণ যুবক পাড়ি দিয়ে একসময় শুভ্রতাময় অবস্থায় পরিনত হয়।
সমাজ থেকে দিন দিন সম্মান শব্দটা নিচে নেমে যাচ্ছে, একসময় বয়স্ক ব্যক্তিদের দেখলে সালাম দিয়ে পথ অতিক্রম করতেন কম বয়সী লোকেরা। আর এখন কিশোর গ্যাংয়ের এর সদস্যরা বড়দের সম্মানের চেয়ে উপদেশ দেওয়াকে বিরক্তির চোখে দেখে। এটা যারা করে তাদের জন্য খুবই ভয়াবহ অবস্থা অপেক্ষা করছে। অচিরেই অনুভব করবে তারা। শুক্রবারে মসজিদের প্রথম দুইটি কাতারে শুভ্রতাময় লোকজনের কাছে বরাদ্দ থাকতো, সময়ের পরিবর্তনে সেই বয়স্ক ব্যক্তিদের দেখা যায় অনেকটা কম।
প্রবীন ব্যক্তি আলহাজ্ব হাঁচি মিয়া (৮৫) বলেন আমাদের সময়ে একে অপরকে যেভাবে সাহায্য সহযোগিতা করতাম, বর্তমান সময়ে এটা দেখা যায় না, আমরা একতা ছিলাম সামাজিক কাজে আর এখন তরুণরা বিশৃঙ্খলায় ভরপুর।
ইসলামে বয়স্ক-প্রবীণ ব্যক্তিদের বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে, প্রবীণদের সম্মানের মাধ্যমে বরকত লাভ হয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘বয়স্কদের সঙ্গেই তোমাদের কল্যাণ ও বরকত রয়েছে।’ (ইবনে হিববান : ৫৫৯) তাই বয়স্ক লোকদেরকে শ্রদ্ধা করা। যথাসম্ভব তাদের খেদমত করা। রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘নিশ্চয় সাদা( শুভ্রতাময় ও দাড়িওয়ালা) চুলবিশিষ্ট মুসলিমকে সম্মান করা আল্লাহকে সম্মান করার শামিল।’ -(আবু দাউদ : ৪৮৪৩)
ইসলামে প্রবীণদের অসম্মানে কঠোর হুঁশিয়ারি রয়েছে
প্রবীণ ও মুরব্বিদেরকে সম্মান প্রদর্শন না করলে রাসুল (সা.) কঠোর বাণী উচ্চারণ করেছেন। হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত আনাস বিন মালিককে (রা.) আমি বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘একজন বয়স্ক লোক রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে দেখা করতে আসল। লোকেরা তার জন্য পথ ছাড়তে বিলম্ব করে। তা দেখে রাসুল (সা.) বললেন, যে ব্যক্তি আমাদের ছোটদের স্নেহ করে না এবং আমাদের বড়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে না, সে আমাদের উম্মত নয়।’ (তিরমিজি : ১৯১৯)।
বড়দেরকে দেখলেই আগে সালাম দেওয়ার চেষ্টা করা। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘ছোটরা বড়দের, চলমান ব্যক্তি বসা ব্যক্তিকে এবং কম সংখ্যক বেশি সংখ্যককে সালাম প্রদান করবে।’ (বুখারি : ৬২৩১)
একবার তিন সাহাবি—আব্দুর রহমান বিন সাহাল, মুহাইয়্যাসাহ এবং খুয়াইসা ইবনে মাসুদ নবীজির দরবারে গেলেন। আব্দুর রহমান বিন সাহাল প্রথমে কথা বলতে শুরু করলেন। নবীজি তাঁকে থামিয়ে বললেন—বড়কে আগে কথা বলতে দাও। (কারণ তিনি সবার ছোট ছিলেন) তিনি তখন চুপ হয়ে গেলেন। বাকি দুজন কথা বলা শুরু করলেন।
ইসলামের এই শিক্ষা যদি সমাজে কাজে লাগানো যায়, সমাজে কখনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবার নয়। গ্রামের মসজিদে প্রবেশ করলে দেখা যায় ৭০ বছরের বেশি বয়সী লোক আজানের আধা ঘণ্টা আগে এসে মসজিদে হাজির হয় এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্ন সহ বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করেন এমন অনেক মুরব্বি রয়েছে সমাজে, আসুন আমরা সেই সব মুরব্বিদের সম্মান করি তাদের সঞ্চয় করা জ্ঞান থেকে আমরা জ্ঞান আহরণ করি।