মুরাদনগরে ‘কালো গাড়ি’ আতঙ্ক, বাড়ি ছাড়া দেড় হাজার নেতাকর্মী

- আপডেট সময় : ০১:৪৬:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ১২ বার পড়া হয়েছে
স্টাফ রিপোর্টার:
‘কালো গাড়ি’ দেখলেই ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। শুরু হয় সকলের ছোট-ছুটি, দৌড়ে পালান এদিক সেদিক। এই বুঝি কালো গাড়িতে করে ডিবি পুলিশের সদস্য এসে গ্রেপ্তার করে ফেলল সবাইকে। আতঙ্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। আর সেই আতঙ্ক থেকে বাঁচতেই এখন ঘর-বাড়ি ছাড়া বিএনপি’র প্রায় দেড় হাজার নেতাকর্মী। গ্রেপ্তার এড়াতে নিজ এলাকা এবং পরিবারের সদস্যদের কে ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন জায়গায়। এমন চিত্র এখন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদর এলাকার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৪ মার্চ মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ সিএনজি স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজির অভিযোগে আবুল কামাল নামের এক শ্রমিক নেতাকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে ছাড়িয়ে নিতে ঐদিন সন্ধ্যায় মুরাদনগর থানা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
পরে এই ঘটনায়, থানায় হামলা করে আসামি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা, পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ এনে মুরাদনগর থানার উপ-পরিদর্শক আলী আক্কাস বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় মুরাদনগর উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানাকে প্রধান আসামি করে ৩১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৭০ থেকে ৮০ জনকে আসামি করা হয়। পাশাপাশি, বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মারধরের অভিযোগ এনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবু ফয়সাল বাদী হয়ে শ্রমিক নেতা আবুল কালামকে প্রধান আসামি করে ৩০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৭০ থেকে ৮০ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করা হয়।
সেই ২ মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়ক হাজী ইদ্রিস সহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ৮ জন নেতাকর্মীকে। এদের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা বিল্লাল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া হয়েছে ১দিনের রিমান্ডে।
পুরো বিষয়টাকে ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে মুরাদনগর উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মোঃ মাসুদ রানা বলেন, সাবেক এমপি ও বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ দাদার মুরাদনগর উপজেলায় যে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা রয়েছে সেটিকে নষ্ট করতেই একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। মামলায় বলা হয়েছে আমরা নাকি চাঁদাবাজকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় হামলা করেছি। পুরো বাংলাদেশে ৫ই আগস্টে কোন থানা নিরাপদ ছিল না, ভাঙচুর হয়েছে সকল জায়গায়। অথচ আমরা মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশদেরকে সুরক্ষা দিয়ে মুরাদনগর থানা কে পাহারা দিয়েছি। মুরাদনগর উপজেলায় চাঁদাবাজি বন্ধে মাইকিং করে জনসচেতনতা তৈরি করেছি।
অথচ সেই আমাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তোলা হচ্ছে, আমরা চাঁদাবাজকে ছাড়িয়ে আনতে নাকি মুরাদনগর থানায় হামলা করেছি। এটি সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা।
মূলত এসব মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনৈতিকভাবে আমাদেরকে দমন পিরণের চেষ্টা চলছে। আমাদের নেতাকর্মীরা কেউ বাড়িতে ঘুমাতে পারছেন না। মামলায় নাম নেই অথচ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে চালান করে দেয়া হচ্ছে। বিগত দিনে আমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছি, এখনো আমাদের সাথে বৈষম্য করা হচ্ছে। আমরা এসব মিথ্যা মামলার হয়রানি বন্ধে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।